মে ২৩, ২০২১,৪:৫৯ অপরাহ্ণ
রোজিনা ইস্যুতে যারা আন্দোলন করছেন এবং প্রাথমিক জামিন হয়েছে এটি একক কোন সংগঠনের কৃতিত্ব নয়। জামিন একটি অধিকার। রোজিনা ঢাকার সাংবাদিক; যেভাবে মফস্বলের সাংবাদিকরা গর্জে উঠেছে; যা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে দয়া করে রোজিনার ইস্যুটিকে ভিন্নখাতে কিংবা লিজ নিতে যাবেন না।
গত ২০ মে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের-বিএমএসএফের ডাকে সারাদেশে দুই শতাধিক জেলা-উপজেলায় একযোগে একই ব্যানারে প্রতিবাদ-সমাবেশ করেছে। এরপর থেকেও আন্দোলন চলমান ছিলো। কিন্তু একযোগে এতগুলো জেলা-উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশ করার পর বিএমএসএফের পক্ষ থেকেতো দাবি করা হয়নি এ কৃতিত্ব আমাদের! কিছু সংগঠনের নেতারা যেভাবে নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করতে চেয়োছেন যা দূ:খজনক।
মফস্বলের সাংবাদিকরা কোন স্বার্থে নয়। তারা হৃদয়ের টানে,পেশার স্বার্থে, সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষায়, দাবি আদায়ে বারবার মাঠে নামে। ঠিক তেমনি মফস্বলের কোন সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন ঘটনায় আপনারাও পাশে থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
রোজিনার ইস্যুটিকে ভিন্নখাতে নিতে একটি চক্র নানাভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এটি বাংলাদেশের (এটুজেড)যেকোন সাংবাদিকের বেলায়ই হবে। মনে রাখতে হবে আপনার জেলার সবচে আদর্শবান সাংবাদিক কোন মিথ্যা ষড়যন্ত্রে আটকে গেলেও একটি নষ্ট দুষ্টচক্র তার পেছনে উঠেপড়ে লেগে যাবে, যা প্রমানিত।
যেভাবে আপনারা রাজধানীতে থেকে সবসময় নিজ জেলাকে গুটিয়ে নিয়ে ভাবেন সেটাকে নেতৃত্ব বলেনা। আপনারাই বলুন ঢাকার সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে শুধু ‘ঢাকা কেন্দ্রীক’ নামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে ঢাকার বাইরের বিষয় নিয়ে যেন আপনাদের ভাবনার সুযোগই নেই।
ভেবে দেখুন ৬৪ জেলার একটিতো ঢাকা জেলা। বাকি ৬৩টি মফস্বল পর্যায়ের জেলা। সাংবাদিকতার ইতিহাসে বিরল বললেও হয়তো ভুল হবেনা ঢাকার বাইরের কোন সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকায় আন্দোলন হয়েছে! তবে কেন? বারবার শুধু আপানাদের জন্য মফস্বলের সাংবাদিকরা শুধু করেই যাবেন! তা কি করে হয় বলুনতো?
আপনারা ঢাকার বাইরে কোনো জেলায় গেলে ঐ জেলার ফুলের তোড়া, হোটেল ভাড়া, খাবার,উপঢৌকন, দধি, আম, লিচু, গামছা, শীতল পাটি, ইলিশ আপনার চাই। কিন্তু ঐ সাংবাদিকরা কখনো ঢাকায় অাসলে এককাপ রং চা কিন্তু তাদের ভাগ্যে জোটেনা। কেননা গ্লাসের ডোর বেদ করে তিন-চারদফা নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা অনেকের কর্মস্থল। সেখানে দেখা মেলানোটা দুস্কর। ভাগ্যক্রমে মিললে তখনও আপনাদের খাইয়ে যেতে হয়।
তবে এবারের রোজিনার ইস্যু গণমাধ্যম/সাংবাদিকদের জন্য বড় ধাক্কার এবং শিক্ষনীয় বিষয় হতে পারে। চলমান ঘটনায় যতটুকু ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে এটি ধরে রাখতে মিডিয়া মালিক-সম্পাদক, সাংবাদিক, সাংবাদিক সংগঠন নেতৃবৃন্দের কাজে আসতে পারে।
সাংবাদিকদের ঐক্য হওয়া চাই কাকের মত। যেমন একটি কাকের বিপদে কোন খবর ছাড়া নিমিষেই শতশত কাক চলে আসা একটি ঐক্যগুণ। আমরা শিক্ষা নিতে পারি। শৃঙ্খলা হওয়া চাই পিঁপড়ের মত। সাংবাদিকতা অঙ্গনে শৃঙ্খলতার যেন চরম অভাব। এই সকল অভাব গোছাতে সাংবাদিক নেতৃ্ৃবৃন্দের আন্তরিক হওয়াটা জরুরী।
আসুন; দেশের গোটা সাংবাদিক সমাজের স্বার্থে পেশাটিকে বাঁচাতে যে যার জায়গায় থেকে আন্তরিক হই। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নে আওয়াজ তুলি। জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে আওয়াজ তুলুন। সাংবাদিকদের ১৪ দফা প্রাণের দাবি আদায়ে সোচ্চার হউন।
♦আহমেদ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ ও সমন্বয়কারী, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি,বাংলাদেশ। ♦
Site Developed By: Md. Shohag Hossain