জুলাই ২৩, ২০১৯,১০:০৭ অপরাহ্ণ
রিয়াদুল ইসলাম (আফজাল), বিডিনিউজটিভি২৪ডটকম: ঈদুল আযহা সামনে রেখে রাজধানী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেনের আগ্রিম টিকেট বিক্রি ২৯ জুলাই শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ওই দিন সকাল ৬টা থেকে অনলাইনে (ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে) এবং ৯টা থেকে কাউন্টারে ৭ অগাস্টের টিকেট দেওয়া হবে বলে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঈদুল আযহার সম্ভাব্য দিন ১২ অগাস্ট ধরে টিকেট বিক্রি হবে। ২৯ জুলাই থেকে ২ অগাস্ট পর্যন্ত ঈদের টিকেট পাওয়া যাবে। ২৯ জুলাই বিক্রি করা হবে ৭ অগাস্টের টিকেট, ৩০ জুলাই ৮ অগাস্টের, ৩১ জুলাই ৯ অগাস্টের, ১ অগাস্টে ১০ অগাস্টের এবং ২ অগাস্টে ১১ অগাস্টের টিকেট বিক্রি করা হবে। ফিরতি ৫ আগস্ট ১৪ আগস্টের, ৬ আগস্ট ১৫ আগস্টের, ৭ আগস্ট ১৬ আগস্টের, ৮ আগস্ট ১৭ আগস্টের ও ৯ আগস্ট ১৮ আগস্টের টিকিট বিক্রি করা হবে। রেলপথ মন্ত্রী বলেন, অনলাইনে টিকেট না পেলে কেউ কাউন্টারে গিয়ে যাতে কাটতে পারেন সেজন্য তিন ঘণ্টা আগে অনলাইনে বিক্রি শুরু হবে। কাউন্টারে টিকিট বিক্রি চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। রাজধানীর কমলাপুর ছাড়াও আরো চারটি জায়গা থেকে টিকিট বিক্রি করা হবে। যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হবে ঢাকার কমলাপুর থেকে, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে, ময়মনসিংহ জামালপুর গামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ট্রেনের টিকেট বনানী স্টেশন থেকে এবং পুরুলিয়ার পুরাতন বিল্ডিং থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে। মন্ত্রী জানান, ঢাকার পাঁচটি টিকেট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে ২৬ হাজার ৫০০ টিকেট বিক্রি হবে। এর অর্ধেক কাউন্টারে বাকি অর্ধেক অনলাইনে বিক্রি হবে। এর বাইরে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া চারটি বিশেষ ট্রেনের আরও তিন হাজার টিকেট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে। ঈদুল ফিতরের আগে অনলাইনের টিকেট কেনায় ভোগান্তির বিষয়ে কথা তুলে ধরে পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম জানান, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সিএনএসবিডি তাদের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় প্রতি মিনিটে তাদের সার্ভার ১৫ হাজার হিট নিতে পারত। এবার প্রতি মিনিটে এক লাখ হিট নিতে পারবে। বিষয়টি দেখার জন্য আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি, কমিটি আগামি বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দেবে। কোটার টিকিটের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ভিআইপিদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু তারা অন্য কারো জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না। তাদের টিকেটে অন্য কেউ যেতে পারবেন না। তিনি বলেন, ঈদে টিকিটের জন্য কোনো সুপারিশ করা হবে না। তবে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সচিবসহ যারা পরিবার নিয়ে যাবেন, তারা টিকিট পাবেন। এর বাইরে কোনো নেতাকর্মী কিংবা কোনো ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করা হবে না। টিকিট কালোবাজারি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে সুজন বলেন, রেলের কেউ যদি কালোবাজারিতে জড়িত থাকে, তাহলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ঈদে কোনো ভিআইপি কিংবা নেতাকর্মীর জন্য টিকিটের সুপারিশ করা হবে না। ঈদুল আজহায় ৮ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে বলে জানান রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঈদের আগে ৮ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট ও ঈদের পরদিন ১৩ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এসব বিশেষ ট্রেন। বিশেষ ট্রেনগুলোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (এক জোড়া) ঢাকা- দেওয়ানগঞ্জ – ঢাকা
রুটে, চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (দুই জোড়া) চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে, সান্তাহার ঈদ স্পেশাল ঢাকা-সান্তাহার-ঢাকা রুটে, লালমনি ঈদ স্পেশল লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে, মৈত্রীর রেক দিয়ে খুলনা ঈদ স্পেশাল (ঈদ পূর্ব ১০ আগস্ট একদিন) খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে, শোলাকিয়া স্পেশাল-১ (ঈদের দিন) ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে, শোলাকিয়া স্পেশাল-২ (ঈদের পরের দিন) ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলবে। শিডিউল ও বিশেষ মিলে ৪৮টি ট্রেনে আসন সংখ্যা ২৬ হাজার ৫শ’। আর ৪টি স্পেশাল ট্রেনে ৩ হাজার আসন রয়েছে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে মোট ১৪৩৭টি কোচ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। রেলপথ মন্ত্রী বলেন, ঈদ উপলক্ষে বরাবরের মতো সারাদেশে ৮ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চালাবে রেলওয়ে। সংবাদ সম্মেলনে রেলের ডিজি মো. শামসুজ্জামান বলেন, চলমান বন্যায় পশ্চিমাঞ্চলে কোনারপাড়া থেকে গাইবান্ধা সেকশনে ৭ কিলোমিটার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি, আশা করি, ২৮ জুলাইয়ের (রোববার) মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে। তিনি জানান, কুড়িগ্রামেও অর্ধকিলোমিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া দোহাজারি ও মেলান্দহ বাজারে ২৫ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজ চলছে, নতুন করে বন্যা না হলে ঈদের আগেই সব কাজ শেষ হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেল সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়া জাহান প্রমুখ।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain