সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫,৩:৪৭ পূর্বাহ্ণ
গাজীপুরের শ্রীপুরে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে এক অসহায় পরিবারকে নয় মাসধরে অবরোদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘ নয়মাস ধরে অবরোদ্ধ পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
উপজেলার শ্রীপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কেওয়া পূর্বখন্ড গ্রামে। প্রভাবশলীরা ওই পরিবারের বশত ভিটা গ্রাস করতে বশত বাড়ির তিন পাশ ঘিরে দিয়েছে বাঁশ আর কাঁটা তারের বেড়া। এতে বিশ বছরের চলাচলেল এক মাত্র পথটি বন্ধ হয়ে গেছে। নয় মাস ধারে তাদের বাড়ি যেতে হয় উঁচু মই বেয়ে বাথ রুমের ছাদ টপকে।বশত বাড়ি গুড়িয়ে দেয়ার শংকায় নির্ঘুম রাত কাটে ওই পরিবারের। অবরোদ্ধ পরিবার টি এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভূক্তভোগী পঞ্চাশোর্ধ শামসুন্নাহার বেগম ওই গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী। ভূক্তভোগী পরিবারটি বিচার চেয়ে কোন প্রতিকার পায়নি।
জানাযায়, সামসুন্নাহারের এক মাত্র সম্বল স্বামীর রেখে যাওয়া সোয়া তিন শতাংশের বশত ভিটা। দুই সন্তান নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস। তার ভিটার উপর সেন দৃষ্টি পড়েছে প্রভাবশালী এক মালিকের। তিন পাশের জমি কিনেছেন ওই মালিক। দিয়েছেন সামসুন্নাহারের চলার পথ বন্ধ করে বেড়া। এতে অবরোদ্ধ হয়ে পড়ে পরিবারটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, সামসুন্নাহারের বাড়ির বাড়ির চার পাশে কাঁটা তার,বাঁশ এবং প্লাষ্টিকের জাল দিয়ে বেড়া দেয়া। মই বেয়ে দেওয়াল টপকে ঝুঁকি নিয়ে নয় মাস বাড়িতে যাতায়াত করছেন তারা। এক ইঞ্চি জায়গা নেই বাড়ি থেকে বের হওয়ার। এক মালিকের পক্ষ নিয়ে বশত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ সহ গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া দিচ্ছে একটি চক্র।
ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিক দের দিকে তেড়ে আসেন মালিকের এজেন্ট নুরুল হুদা। তথ্য সংগ্রহে বাধা দিয়ে বলেন, আমাদের জমিতে যাইয়েন না। মালিকের নিষেধ আছে। ওই খানে যাওয়া মানা।
শামসুন্নাহার অভিযোগ করে বলেন, সাড়ে তিন শতাংশের বশত ভিটায় বিশ বছরের বসবাস। পাঁচ বছর পূর্বে স্বামী মারাযান। বশত ভিটাই শেষ সম্বল। ওই বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে সামসুন্নাহারের বসবাস। গত বছরের সাত আগষ্ট তার উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। প্রভাবশালী মালিকের সেন দৃষ্টি পড়ে সামসুন্নাহারের জমিতে। তাকে ভিটে ছাড়া করতে বাড়ির তিন পাশ বেড়া দিয়ে অবরোদ্ধ করা হয়। নয়মাস ধরে সামসুন্নাহার বাড়িতে যাতায়ত করেন মই বেয়ে। থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও মেলেনি প্রতিকার। উল্টো মামলার জালে জড়িয়েছেন স্বপরিবারে। এক ইঞ্চি জায়গা নেই বাড়ি থেকে বের হবার। দীর্ঘ নয়টি মাস কেটে যাচ্ছে অবরোদ্ধ অবস্থায়।
বিধবা ওই নারী আরো বলেন, আমাদের নির্যাতন করা হচ্ছে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে। আমরা থানা পুলিশ এবং উপজেলায় অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। ভিটা ছাড়া হলে মরন ছাড়া উপায় নেই। দু’সন্তান নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
সাইফুল ইসলাম দিপু বলেন, দীর্ঘ নয়মাস যাবৎ আমরা অবরোদ্ধ। আমাদের উপর চলছে নির্যাতন। বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে মাকে কয়েক দফা মারপিট করা হয়েছে। কোটি টাকার জমি নাম মাত্র মূল্যে গ্রাস করতে চালানো হচ্ছে অত্যাচার। বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে আমাদের চলাচলের পথ।
মালিকের স্থানীয় এজেন্ট নুরুল হুদা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কার নির্দেশনায় করছি এটা তাদের কাছে জানুন। আপনারা আমাদের বেড়ায় টার্চ করতে পারবেন না। ওই জায়গায় যাইয়েন না। আপনাদের সঙ্গে কোন কথা নেই। বক্তব্য জানতে নুরুল হুদার কাছে মালিকের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন,ওনার নম্বর দেয়ার নিষেদ আছে। যে কারণে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, বিষয়টি জানা ছিলোনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। এই বিষয়ে দ্রুত সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যরিষ্টার সজীব আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবরুদ্ধ পরিবারকে সব ধরনের আইনী সহায়তা করা হবে।
সঠিক সংবাদ সংগ্ৰহ করা হয় ।
Md. Riadul Islam (Afzal) Site Developed By: Md. Shohag Hossain