জুন ২, ২০১৬,১১:৩৩ অপরাহ্ণ
বিডি নিউজ টিভি ২৪ ডট কম: ঢাকা : বহুজাতিক তামাক কোম্পানির পক্ষে অর্থমন্ত্রী। তাই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার তেমন প্রতিফলন ঘটেনি বাজেটে এ মন্তব্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রজ্ঞা ও আত্মা নামে বেসরকারি দুটি সংগঠন।
দামি সিগারটের করহার প্রায় অপরিবর্তিত রাখার মাধ্যমে আবারও রেহাই দেওয়া হল বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে। গত একবছরে জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে এই প্রস্তাব চরম জনস্বাস্থ্যবিরোধী। এর ফলে এই স্তরের সিগারেটের ভোক্তারা বাজেটের পর আরও কম দামে একই পরিমাণ সিগারেট কিনতে পারবে। একইসঙ্গে এই স্তরের সিগারেট থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে না মনে করে প্রজ্ঞা ও আত্মা।
অথচ ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত করার কৌশল হিসেবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী একটি সহজ তামাক কর কাঠামো প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকজাত পণ্যের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস ও তামাক রাজস্ব বৃদ্ধির কথা বলেছেন। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সে সবের তেমন কোনো প্রতিফলন নেই।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় এখন থেকে সিগারেটের সর্বনি¤œ মূল্য নির্ধারণ করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন। প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনি¤œ মূল্য ১৮ টাকার স্থলে ২৩ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন। এই বৃদ্ধি প্রায় ২৭.৭৭ শতাংশ। উচ্চ স্তর ৪৪-৬৯ টাকার পরিবর্তে ৪৫ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং প্রিমিয়াম স্তর আগের মূল্য অর্থাৎ ৭০ টাকা ও তদূর্ধ্ব বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই দুই স্তরে সম্পূরক শুল্ক মাত্র ১% বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৬২% ও ৬৪% নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে ভোক্তা পর্যায়ে এই দুই স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে।
বিড়ির স্বাস্থ্যক্ষতির ভয়াবহতা এবং এই খাতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা অতি নগণ্য এই বাস্তবতা অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় স্বীকার করেছেন। তামাকবিরোধীরাও দীর্ঘদিন একই কথা বলে আসছিলেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর বৃদ্ধি করা হয়েছে জর্দ্দা ও গুলের ওপর। গত ২ বছর থেকে এ দু’টি তামাক পণ্যের উপর সম্পূরক শুল্কের হার ৬০% থেকে বাড়িয়ে ১০০% করা হয়েছে। এছাড়াও পণ্য দুটির আমদানি শুল্কও ১০০% থেকে বৃদ্ধি করে ১৫০% নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও এর সুফল তখনই পাওয়া যাবে যখন এসব পণ্যে নিধারিত কর আরোপ করে দাম বৃদ্ধি করা হবে তার আগে নয়। জর্দা ও গুলের উপর প্রযোজ্য কর আহরণের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ জরুরি।
অন্যান্য কর প্রস্তাবগুলোর মধ্যে, বিড়ি, জর্দা এবং গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির আয়কর ২৫ বা ৩৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৪৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সিগারেট কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান ৪৫ শতাংশ কর হার বহাল রাখা হয়েছে। সিগারেট, বিড়ি, গুল এবং জর্দাসহ তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি ও ফার্মের নূন্যতম করহার তাদের প্রোগ্রেরেজ প্রাপ্তির ০.৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও তামাকজাত পণ্য তৈরির যন্ত্রপাতি আমদানি শুল্ক ১% থেকে বাড়িয়ে ১০% করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর ২০১৬-১৭ বাজেট প্রকাশের পর গণমাধ্যমে পাঠান এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে প্রজ্ঞা ও আত্মা নামের এ দুটি সংগঠন।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain