মার্চ ২৮, ২০১৯,২:৪৬ অপরাহ্ণ
মোঃ রিয়াদুল ইসলাম (আফজাল),বিডিনিউজটিভি২৪ডটকম : স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার প্রগতি সরণিতে সুপ্রভাত পরিবহনের যে বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়, সেটি চালাচ্ছিলেন ওই বাসের ‘কন্ডাকটর’। গত মঙ্গলবার রাত ও গতকাল বুধবার সকালে চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও ঢাকার মধ্যবাড্ডায় অভিযান চালিয়ে ওই বাসের ‘কন্ডাকটর’ ইয়াসিন এবং চালকের সহকারী ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা। গত ১৯ মার্চ ওই দুর্ঘটনার পর টানা দুই দিন ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিইউপিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের আশ্বাসে দাবি পূরণের জন্য সাত দিন সময়ে কর্মসূচি স্থগিত করে আন্দোলনকারীরা। বাসটির চালক সিরাজুল ইসলামকে (২৪) ঘটনার দিনই গ্রেফতার করে পুলিশ। আবরারের বাবা আরিফ আহমেদ চৌধুরীর দায়ের করা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিরাজুলকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল বাতেন গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকার মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাসের কন্ডাকটর ও হেলপারকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় সুপ্রভাতের বাসটি চালাচ্ছিলেন কন্ডাকটর ইয়াছিন। তার কোনো ড্রাইভার্স লাইসেন্স ছিল না। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুপ্রভাতের ওই বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম সেদিন ভোর পৌনে ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা হন। সহকারী ইব্রাহিম ও কন্ডাকটর ইয়াছিনও সে সময় বাসে ছিলেন। শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকায় ওই বাসের চাপায় গুরুতর আহত হন মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথীয়া সুলতানা মুক্তা। বাসের যাত্রীরা তখন চালক সিরাজুল ইসলামকে ধরে পুলিশে দেয়। পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন বলেন, বাসটি তখন রাস্তার পাশে দাঁড় করানো ছিল। উত্তেজিত জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় মালিক ননী গোপালকে ফোন করে ইয়াছিন। মালিক তখন ইয়াছিনকে দ্রুত বাসটি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে বলেন। বাসটি ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার সময় চালকের আসনে ছিলেন কন্ডাকটর ইয়াছিন। নদ্দায় প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরা গেইটে বাসটি আবরারকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আর ইয়াছিন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বাস থেকে পালিয়ে যান। দুর্ঘটার পর সেদিনই সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসের রুট পারমিট বাতিল করে বিআরটিএ। পরে ঢাকা মহানগরীতে সুপ্রভাতের সব বাস ও মিনিবাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ওই বাসের মূল চালক সিরাজুল হালকা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নিয়েই নিয়ম ভেঙে বাসের মতো ভারী বাহন চালাচ্ছিলেন। পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার বাতেন বলেন, সিরাজুলকে ধরা হয়েছিল শাহজাদপুরের দুর্ঘটনার পর। নদ্দায় আবরারের দুর্ঘটনার কথা সে জানত না। ফলে তার বক্তব্য মিলছিল না। ইয়াছিন ও ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করার পর বিষয়টি স্পষ্ট হয়। জবানবন্দি দেওয়ার জন্য ইয়াছিন ও ইব্রাহিমকে গতকাল বুধবার আদালতে পাঠানো হবে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান। এ মামলার অপর আসামি বাসের মালিক ননী গোপালকে গ্রেফতার করা হবে কিনা জানতে চাইলে বাতেন বলেন, গ্রেফতার দুজনের জবানবন্দি নেওয়ার পর পুলশ পরবর্তী পদক্ষেপে যাবে। আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায় মামলা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মুক্তার আহত হওয়ার ঘটনাতেও একটি মামলা হবে। এক মাসের মধ্যে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দেব।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain