জুন ১১, ২০১৭,১২:২১ পূর্বাহ্ণ
খেলাধুলা ডেস্ক : ম্যাচটা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের কোনো রকম টেনশনই ছিল না। প্রথম দল হিসেবে স্বাগতিকরা তো আগেই পা রেখেছে শেষ চারে। টেনশন ছিল অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের। অস্ট্রেলিয়ার টেনশনের কারণ-বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে গেলে বা হারলে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ। বাংলাদেশের টেনশন আবার অস্ট্রেলিয়ার জয়ে। ইংল্যান্ডের হার মানে যে মাশরাফিদের দেশে ফেরা।
না, দেশে ফিরতে হচ্ছে না। ডু অর ডাই ম্যাচ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের কাছে (বৃষ্টি আইনে) ৪০ রানের হৃদয় ভাঙা হারে বিদায় হয়ে গেছে অজিদের। আর স্বপ্নের সেমিফাইনালে ওঠে গেছে মাশরাফির দল।
চাওয়ার সঙ্গে পাওয়া এবং স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতা মিলে যাবে এভাবে, কে ভেবেছিল! অবিশ্বাস্য! বড় বড় দলকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো অভিজাত টুর্নামেন্টের শেষ চারে টাইগাররা। এ যে ঐতিহাসিক!
বার্মিংহামে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ৯ উইকেটে ২৭৭। জবাবে ৪০.২ ওভারে ইংল্যান্ডের রান যখন ৪ উইকেটে ২৪০, মানে নিশ্চিত জয়ের পথে, তখন শুরু হয় বৃষ্টি। পরে আর খেলা মাঠে না গড়ায়নি। এগিয়ে থাকার সুবাদে বৃষ্টি আইনে ৪০ রানে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ডের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে উঠে যায় বাংলাদেশ।
বার্মিংহামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া যেভাবে শুরু করেছিল তাতে চিন্তা বেড়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশিদের। ৪২.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২৩৯। ৩২০-৩৩০ রান তো হবেই। কিন্তু না, হয়নি। শুরুতে সেভাবে না পারলেও শেষ দিকে অজি ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন ইংলিশ ফাস্ট বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ২৭৭ রান তুলতে পারে আজিরা। এই রানে কিছুটা স্বস্তি ছিল টাইগার সমর্থদের মধ্যে, কিন্তু একবারে নির্ভার ছিলেন না। প্রথম দিকে ভালো বল করেন ফাস্ট বোলার উড। আর পরে অজিদের বেকায়দায় ফেলেন স্পিনার আদিল রশিদ। ইংল্যান্ডের শেষ চার ব্যাটসম্যান আউট হন দুই অঙ্ক স্পর্শ করার আগেই।
৬৪ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন হিড। ফিঞ্চ ৬৪ বলে করেন ৬৮। অধিনায়ক স্মিথ করেন ৫৬। হিড অপরাজিত থাকেন রানে। ইংল্যান্ডের পক্ষে উড ও আদিল রশিদ চারটি করে উইকেট নেন।
২৭৮ রানের টার্গেট। একেবারে কম নয়। এ এক শঙ্কা। এই শঙ্কা রূপ নিল ভয়ানক চিন্তায়। নাহ, হলো না। বাংলাদেশের বিদায় ধরেই নিয়েছিলেন অনেকে। ৩৫ রানে নেই ৩ উইকেট। শুক্রবার বাংলাদেশ যেমনটা শুরু করেছিল। ধংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাঁড়েয়ে যেমন করে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ, শনিবার সেটাই করে দেখায় ইংল্যান্ড। একদিন আগে বীরত্ব দেখান সাকিব-রিয়াদ। এদিন ব্যাটে ঝড় তুললেন মরগান-স্টোকস। ১৫৯ রানের জুটি। ৮১ বলে ৮৭ রান করে রান আউট না হলে সেঞ্চুরিটা হয়তো মিস হতো না মরগানের। মরগানের মিস হলেও মনে রাখার মতো সেঞ্চুরি করেছেন অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ১০৮ বলে সেঞ্চুরি, আর ১০২ রানে অপরাজিত। ব্যাটলার অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে। জয়ের একেবারে নিকটেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। বৃষ্টি ফিনিশিংটা দিতে না দিলেও জয়টা শতভাগ ইংল্যান্ডেরই প্রাপ্য ছিল। এবং সেটাই হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৭৭/৯ ( ওয়ার্নার ২১, ফিঞ্চ ৬৮, স্মিথ ৫৬, হেনরিক ১৭, হিড ৭১* , ম্যাক্সওয়েল ২০ ; উড ৪/৩৩, আদিল রশিদ ৪/৪১)
অস্ট্রেলিয়া : ৪০.২ ওভারে ২৪০/৪ ( জেসন রয় ৪, হলস ০, রুট ১৫, মরগান ৮৭ , স্টোকস ১০২*, বাটলার ২৯* ; স্টার্ক ১/৫২ , হ্যাজলউড ২/৫০ )
ফল: এগিয়ে থাকার সুবাদে বৃষ্টি আইনে ইংল্যান্ড ৪০ রানে জয়ী
Site Developed By: Md. Shohag Hossain