জানুয়ারি ৪, ২০২২,৮:৩২ অপরাহ্ণ
জিন্নুর রহমান,জেলা প্রতিনিধি,রংপুরঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রতিদিন হুহু করে কমছে আলুর দাম। আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম না থাকায় লোকসানের মুখে পড়েছে এ উপজেলার আলু চাষিরা। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ৯ টাকা কেজি দরে। ফলে আলু চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। লোকসান কমাতে আলুচাষিরা সরকারীভাবে আলু রফতানির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর আলুর দাম বেশি থাকার কারণে এবার নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। শুরুতে প্রতিকেজি আলুর বাজার দর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি থাকলেও কয়েকদিনের মধ্যেই বাজার কমতে শুরু করে।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সরেজমিনে বড়ভিটা ইউনিয়নের পাইকারটারী, বড়ডুরিয়া, ঘোনপাড়া, পশ্চিম পাড়া, মেলাবর গ্রাম, পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর, নিতাই ইউনিয়নের মুশরুত পানিয়াল পুকুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা জমি থেকে আলু উত্তোলন করে কেউ কেউ জমিতেই ফেলে রাখছেন আবার কোন কোন কৃষক আলু বস্তায় ভরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রির জন্য।
বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ডুমরিয়ার কৃষক সফিয়ার রহমান, আঃ মাসুদ, আশরাফুল, হামিদুল, সাহেব আলী বলেন, আমি এবার ৯ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। প্রতিবিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ বস্তা আলু ফলছে। কিন্তু আলুর বাজার কম হওয়ার কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ৯ বিঘা জমিতে তার খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। ৯ বিঘা জমির আলু বিক্রি করে আমি টাকা পেয়েছি এক লাখ ৮০ হাজার। আমার ৭০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।
পুটিমারী ইউনিয়নের আলু চাষি একরামুল হক বলেন, আমার ৫ বিঘা জমিতে ১৫০ বস্তা আলু হয়েছে। খুলনা নিয়ে গিয়ে প্রতিকেজি আলু ৯ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আলু বিক্রি করে মোট দাম দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। ট্রাকভাড়া ও অন্যান্য খরচবাদে পেয়েছি ৭৫ হাজার টাকা। এবার ধান বিক্রি করে আলু চাষ করে ফতুর হয়ে গেলাম।
কিশোরগঞ্জ বাজারের এক আলু ব্যবসায়ী জানান, গত বছর আলুর দাম বেশি হওয়ায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের নামে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু এবার কৃষকরা আলু নিয়ে বিপাকে পড়লেও কারো কোন নজরদারি নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, এ উপজেলা আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। লোকসান হলেও এ উপজেলার কৃষকরা আলু চাষে বিমুখ হবেনা। তবে তিনি আরও বলেন, যেহেতু উৎপাদন ভাল দামটা একটু বেশি হলে লোকসান হতোনা।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain