ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১,৩:১৯ পূর্বাহ্ণ
বিভাগরাজনীতি,
চট্রগ্রামে প্যানেল মেয়র নির্বাচন নিয়ে এবার শুরু হয়েছে পুরাতন নগরের নতুন রাজনীতির খেলা,
মোঃ শহিদুল ইসলাম (শহিদ)
চিফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্যানেল মেয়র নির্বাচন নিয়ে এবার শুরু হয়েছে নগরের রাজনীতির নতুন মেরুকরণের হিসাবনিকাশ। মেয়র ও কাউন্সিলররা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সাধারণ সভায় নির্বাচন করা হবে তিন সদস্যের এই প্যানেল। এই পদ পেতে সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ৫৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ডজনখানেক এর মধ্যেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা এর মধ্যেই প্যানেলে জায়গা করে নিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নেমে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
মেয়র নাছির ও শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীদের এই যুদ্ধে নবনির্বাচিত মেয়র খুব একটা আলোচনায় না থাকলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত জয় পরাজয় নির্ধারণে প্রকৃত অর্থে ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠবেন রেজাউল করিম চৌধুরী। পাশাপাশি আগামী দিনগুলোতে চসিক পরিচালনায় নওফেল-নাছির প্রভাব বলয়ের বাইরে গিয়ে নিজস্ব কোন ধারা তৈরি করবেন কিনা সেই প্রশ্নেরও উত্তর মিলবে এই নির্বাচনে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেয়র রেজাউল করিম চসিক পরিচালনায় শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারীদের সাথে সমন্বয় করে চলার সিদ্ধান্ত নিলে প্যানেল মেয়র নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে থাকবেন নওফেল শিবিরের কাউন্সিলররা। অন্যদিকে রেজাউল ভিন্ন পথে ভাবলে উল্টেও যেতে পারে পাশার দান।
এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণায় রেজাউলের সাথে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। বিভিন্ন কারণে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে আ জ ম নাছির ছাড়া আর কোনো নেতাই রেজাউলের সাথে ভোটযুদ্ধে মাঠে নামতে পারেনি। রেজাউলের কাছে মনোনয়ন খুইয়েও একলা হাতে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে রেজাউলকে নিয়ে যেভাবে চষে বেড়িয়েছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক, তা নাছির-রেজাউলের সম্পর্কে নতুন এক মাত্রা দিয়েছে বলেই মনে করেন তারা, চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের এই রসায়ন নাছিরের অনুসারীদের মাঝে খানিকটা স্বস্তির সুবাতাস দিতেও পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, এবার প্যানেল মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। আগে এই তিনটি পদে হাতেগোনা কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও এবার সবচেয়ে বেশি হবে এই পদপ্রত্যাশী।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, সাধারণ ওয়ার্ড থেকে দুজনের বেশি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলে গোপন ব্যালটে, তিনজনকে নির্বাচিত করা হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৪০টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ৫৪ জন কাউন্সিলর।
৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুর কারণে এ ওয়ার্ডে স্থগিত হওয়া ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।
নাম প্রকাশ না করে আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে কয়েকজন জানান, এবার নির্বাচিত কাউন্সিলরের মধ্যে বেশিরভাগই সাবেক মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। সেই সূত্রে মহিউদ্দিনের বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তারা। অন্যদিকে ডজনখানেক কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, যারা আ জ ম নাছিরের অনুসারী। কাউন্সিলর হিসেবে নাছিরের মেয়াদেও ছিলেন তারা। তবে এবার দল সমর্থিত বেশিরভাগ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ছিলেন নওফেলের অনুসারী। ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত তৎকালীন মেয়র নাছির উদ্দীনের অনুসারী।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain