ডিসেম্বর ২১, ২০১৭,১০:১৮ অপরাহ্ণ
বিডি নিউজ টিভি ২৪ ডট কম: মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম: চট্টগ্রাম: বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মধ্যে পরিবহণ ব্যবস্থায় চলছে নানান ধরনের অনিয়ম। এই সব অনিয়মের পিছনে একধরনের দালাল চক্র নিয়মিত জিম্মি করে রেখেছে সম্পূর্ণ বন্দর নগরী চট্টগ্রাম কে। এদের দৌরাত্ব এতটাই বেশী যে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এরা নিয়মিত তাদের অবৈধ এই সব পরিবহণ লাইনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারী ভাবে যত গুলো গাড়ীর অনুমতি দেয়া হয় তার থেকেও অনেক বেশী গাড়ী পরিচালনা করছে এই সব দালালেরা এক ধরনের ম্যানেজমেন্ট ও টোকেন এর মাধ্যমে। যার ফলে রাস্তায় যানযট নিরসনে তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা। নগরীর আন্দরকিল্লা নিউ মার্কেট জি.ই.সীর মোড়, ২ নং গেইট , সল্টগোলা ক্রসিং , ইপিজেড এমন কোন জায়গা নেই যেখানে যান যট নাই এবং এমন কোন রোড নেই যেখানে পরিবহণ লাইনের ব্যবসা চলছে না। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন নিয়মের ভিতরে অনিয়মের পরিবহণ বন্ধ করা না গেলে যানযট নিরসন শুধু স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। বন্দর নগরীর শাহ আমানত সংযোগ সেতু , নিউমার্কেট হয়ে টাইগারপাস, দেওয়ান হাট ব্রীজ সংলগ্ন আমবাগান রোডে এবং ২ নাম্বার গেইট হতে অক্সিজেন রোডে সি.এন্ড.বি. রাস্তার মাথা হতে মদুনা ঘাট এলাকায় যে মাহিন্দ্র বা পিকআপ ভ্যান গুলো নিয়মিত চলাচল করছে তার অধিকাংশ চালকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। টাইগার পাস আমবাগান রোডের মুখে পথ চারিদের মধ্যে রেজাউল করিম নামক ব্যক্তি পেশায় একজন শিক্ষক ক্ষোভের সাথে বলে উঠলেন কিছুই হবে না। কত দেখছি এই গুলো। রাস্তার ওই পাড়ে দেখুন সেটা কি। দেখলাম তার উল্টোদিকেই ট্রাফিক সার্জেন্টদের পুলিশ বক্স এর অবস্থান। আশে পাশে কিছু দায়িত্বরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশ দেখা গেলো। ওই শিক্ষক সহ আরও কিছু সাধারণ মানুষ ক্ষোভের সাথে জানালেন প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে এত কাছে পুলিশ বক্স থাকা সত্বেও কিভাবে সম্ভব যার কোন ড্রাইভিং লাইসেন্সই নাই সে যান বাহনের স্টিয়ারিং এ হাত দিয়ে দিব্যি ভাড়ায় গাড়ী চালাচ্ছেন নিয়মিত। প্রতিদিন এই সব অদক্ষ চালকের হাতে গাড়ী তুলে দেন মালিক পক্ষ আর এদের কে গাড়ী চালানোর সুযোগ করে দেন একধরনের দালাল চক্র। সব মিলিয়ে অসংখ্য মানুষের জীবন প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এই সব পরিবহণে যাতায়াত করছেন। অতীতে অনেক বড় বড় দুর্ঘটনার স্বাীকার হলেও সাধারণ মানুষ তাতে কারোরই কিছু আসে যায়না। এই সব অনিয়ম বন্ধ হলে বন্ধ হয়ে যাবে টোকেন বানিজ্য। তাই সব কিছু জানা সত্বেও ক্ষেত্র বিশেষ এ নিশ্চুপ অনেক দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট। আর এরই ফাঁক ফোকরের ভিতর দিয়ে যে কোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের মারাতœক দুর্ঘটনা। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন হলো এসব দুর্ঘটনার দায় কার উপর বর্তাবে? এছাড়াও নগরীতে সিটি সার্ভিস গুলো অনেক বেশী বেপরোয়া চলাচল করছে। রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় দেখলে মনে হবে যেন তারা প্রতিযোগীতায় নেমেছে। নির্ধারিত স্থানে যাত্রী উঠানামা না করে রাস্থার মাঝেই এ কাজটি সেরে ফেলেন এবং পিছনে লম্বা লাইনের যানযট ও অসংখ্য গাড়ীর হর্ণ তাদের কর্ণপাত হয়না। এক্ষেত্রে সরজমিনে প্রত্যক্ষ করা বন্দর নগরী চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়, লাল দিঘীর পাড়, আন্দর কিল্লা , ইপিজেড, বন্দর টিলা কাঠগড়, পতেঙ্গ সহ সব স্থানেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। এর ফলে শব্দ দুষণ এবং পরিবেশ দুষণ দুটোর শিকারই হন সাধারণ মানুষ আর ভোগান্তিরতো কোন শেষ নেই। নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ণের প্রতিযোগীতায় নামে চালকেরা। একজন চালকের সাথে আলাপ করে জানা গেল এসব কোন ব্যাপার না। আমরা মাসিক টোকেন এর মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন দায়িত্ব রত সার্জেন্টরা কি করছেন তারা কি দায়িত্ব অবহেলা করছেন নাকি যথাযথ আইন প্রয়োগে বাধার স্বীকার হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লাইসেন্স বিহীন চালক জানিয়েছেন তারা নিয়মিত চাঁদা দিয়ে পেটের দায়ে এই ভাবে গাড়ী চালিয়ে সংসার চালান। এখানে পয়সা দিলে তাদের কাগজপত্র কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলেও কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। তাদের আর কেউ গাড়ী চালাতে বাধা দেয়না। এছাড়াও মহানগরীর অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট সময়ে ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ভরদুপুরে চলছে ট্রাক। এভাবে সারাদিনই এই সব ট্রাক নগরীতে দেখা যায়। যার জন্যে যান জট নিয়মিত লেগেই থাকে। জিজ্ঞাসা করলাম চালক কে কি ভাবে চালান? উত্তর দিলো পয়সা দিয়া চালাই। আবারও প্রশ্ন করলাম কাকে পয়সা দেন? ঐ ট্রাক চালক বললেন আপনি গাড়ী চালালে বুঝতে পারবেন কোন কোন জায়গায় পয়সা দিতে হয়।তিনি আরও বললেন আমরাতো জিম্মী হয়ে গেছি। এভাবেও যদি গাড়ী চালাতে না পারি তবে আমরা খাব কি, হ্যা সত্যি বলতে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে রাতা রাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যক্তি। কারণ তারা তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্বের চাইতে বেশী সময় দিচ্ছেন এই সব পরিবহণের অবৈধ অর্থের পিছনে। এছাড়াও পরিবহণ মালিক ও চালকদের বেশ কিছু অভিযোগ আছে পরিবহনের মামলা ও জরিমানা আদায়ের বিষয় নিয়ে। তারা বলছেন তাদের গাড়ীকে যখন মামলা টো-করা হয়, তখন তারা সরকার নির্ধারিত জরিমানা নিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে যান এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত জরিমানা থেকেও বেশী টাকা দিতে হয়। এছাড়াও জরিমানা আদায়ের সরকারি কোন রশিদ পত্র পরিবহণ মালিক বা চালকের হাতে দেয়া হয় না। শুধু মাত্র অফিসিয়াল লেজারে এন্ট্রি দেয়া হয়। সাধারণভাবে যারা স্বল্প আয়ের পরিবহণ মালিক তারা আশা করছেন প্রশাসনের উর্ধ¦তন কর্মকর্তারা ব্যাপারটি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। তাদের অভিযোগ কেইস ¯িøপ ও ফাইল জমা নেয়ার পর যখন তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় তখন যেন তাদের জরিমানা আদায়ের সরকারি রশিদ পত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়। বন্দর নগরীর কোন অফিস থেকেই এই সব জরিমানা আদায়ের কোন রশিদপত্র ভুক্তভোগীদের হাতে দেয়া হয় না।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain