জুলাই ২৫, ২০১৭,১০:২১ অপরাহ্ণ
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তায়জুল ইসলাম ‘জাল সনদ’ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে তায়জুল বলছেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জেলার চাটমোহর উপজেলার অষ্টমনিষা মির্জাপুর গ্রামের আবদুল আজিজ প্রামাণিকের ছেলে তায়জুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০০৫ সালে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করেন। ২০০৬ সালে ৩২ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। সম্প্রতি অভিযোগ ওঠার পর তদন্তে নামে শিক্ষা অধিদপ্তর। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, বেশ কবার সময় দেওয়ার পরও তায়জুল তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য কোনো দালিলিক প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তিনি তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র জমা দিলেও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল প্রদত্ত সংজ্ঞার শর্তাবলি পূরণ হয়নি। মুক্তিবার্তা তালিকা, ভারতীয় তালিকা কিংবা প্রধানমন্ত্রী প্রতিস্বাক্ষরিত সনদ – কোনোটিই তার নেই। তায়জুলের বাবা আবদুল আজিজ প্রামাণিক কোথায় যুদ্ধ করেছেন তা জানেন না বলে দাবি করেছেন চাটমোহর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মোজাহার হোসেন।
তিনি বলেন, “তাকে আমাদের চাটমোহরের মুক্তিযোদ্ধারা শনাক্ত করতে পারেননি। আমরা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি নাকি পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের মুক্তিযোদ্ধাদের বাবুর্চি ছিলেন। কিন্তু যুবশিবিরের অনেকের সঙ্গে কথা বলেও আমি তাদের কোনো বাবুর্চি ছিল বলে প্রমাণ পাইনি। মুক্তিযুদ্ধ তো আনন্দ ভ্রমণ ছিল না যে মুক্তিযোদ্ধারা সঙ্গে বাবুর্চি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন।”
চাটমোহরের মির্জাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও পাবনা বার সমিতির সভাপতি শাহ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আব্দুল আজিজ প্রামাণিক মুক্তিযোদ্ধা নন। জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে তার সন্তান সকল মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করেছেন। তিনি এই ‘দুর্নীতির’ সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আরেক মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছু মানুষের অপকর্মের জন্য আজ মুক্তিযোদ্ধা শব্দের আগে ‘ভুয়া’ যোগ হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? তবে তায়জুল ইসলাম বলছেন, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, সহকারী শিক্ষক তায়জুল ইসলামের ব্যাপারে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। সিদ্ধান্ত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Site Developed By: Md. Shohag Hossain